বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:৩৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনামঃ

‘ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে’ চিকিৎসকের সঙ্গে ডিম ব্যবসায়ীর প্রেম, বিয়ে না করায় অপহরণ

প্রথম পাতা
প্রকাশিতঃ বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:৩৮ পূর্বাহ্ন

সোমবার ভোরে রাজশাহী নগরীর চন্দ্রিমা এলাকার বাসা থেকে নারী চিকিৎসককে অপহরণ করা হয়।

রাজশাহীতে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে এক নারী চিকিৎসকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এক যুবক। পরে বিয়ের প্রস্তাব দেন। পরবর্তী সময়ে চিকিৎসকের পরিবার খোঁজ নিয়ে জানতে পারে ওই যুবক একজন ডিম ব্যবসায়ী। এতেই বাধে বিপত্তি। বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দেয় চিকিৎসকের পরিবার। তারই সূত্র ধরে নিজ বাসা থেকে নারী চিকিৎসক অপহরণের শিকার হন। সোমবার অপহরণের ঘটনায় নগরের চন্দ্রিমা থানায় করা মামলার এজাহার থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

পাবনার সাথিয়া থানার বামনডাঙ্গা গ্রামের তানজিম খান তাজ নীরব (৩০) এই অপহরণের ঘটনায় জড়িত বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। সোমবার ভোরে নিজ বাসা থেকে অপহরণের শিকার হন নারী চিকিৎসক। তিনি রাজশাহীর একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ থেকে সম্প্রতি ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি (বিডিএস) শেষ করেছেন। তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। তাদের বাসা রাজশাহী নগরে। ওই দিন রাতে চন্দ্রিমা থানায় মামলা করেন চিকিৎসকের বাবা। মামলায় তানজিম খানের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত তার কয়েকজন সহযোগীকে আসামি করা হয়েছে।

নারী চিকিৎসকের পরিবার জানায়, সোমবার ভোরে রাজশাহী নগরীর চন্দ্রিমা এলাকার বাসা থেকে শাকিরাকে অপহরণ করেন তানজিমসহ কয়েকজন। এসময় তার বাবা আবু তাহের মো. খুরশীদকেও (৬০) অপহরণ করা হয়। পরে তাকে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা এলাকায় ফেলে যায় অভিযুক্তরা। আর শাকিরার মা রেহেনা পারভীনকে দেয়ালে মাথা ঠুকে আহত করে তারা।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, তানজিম খানের বর্তমান ঠিকানা পদ্মা আবাসিক এলাকার ১০ নম্বর রোডে। ৩-৪ বছর আগে তিনি শাকিরার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তখন তিনি নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দেন। সম্প্রতি বিয়ের প্রস্তাব দিলে মামলার বাদী তাতে রাজি হননি। তখন থেকেই তানজিম তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলেন। সোমবার সকালে বাদী আবু তাহের ফজরের নামাজ পড়ার জন্য বাসা থেকে বের হন। রাস্তায় বের হলে পেছন থেকে দুর্বৃত্তরা মারধর করে মুখ স্কচটেপ দিয়ে তাকে কালো রঙের তোলেন। পরে তার পকেটে থাকা বাসার চাবি নিয়ে বাসার ভেতরে ঢোকেন। ঘরে ঢুকে তানজিম তার হাতে থাকা রামদা দিয়ে রেহানা পারভীনের মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত করেন। পরে তার মেয়েকে গাড়িতে তুলে নেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাদী আবু তাহেরকে সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল এলাকায় রাস্তার পাশে ফেলে তার মেয়েকে নিয়ে চলে যায় অপহরণকারীরা। তিনি বাড়ি ফিরে রাতে থানায় মামলা করেন।

পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় চন্দ্রিমা থানায় অপহরণ মামলা হয়েছে। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার ও অপহরণের শিকার নারী চিকিৎসককে উদ্ধারের চেষ্টা করছে।

রাজশাহী নগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান জানান, অপহরণকারী তানজিম নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে চিকিৎসক শাকিরার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে যখন তার পরিবার জানতে পারে, তিনি ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট তখন তারা বিয়ে দিতে অস্বীকার করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে অপহরণ করা হয়।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে রাজশাহী নগরীর চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান বলেন, “বাদী অপহরণকারী ব্যক্তিদের চিনতে পেরেছেন। পুলিশের দিক থেকে ওই চিকিৎসককে উদ্ধারের সব ধরনের তৎপরতা চালানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। উদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। এই ঘটনায় অপহরণের শিকার নারী চিকিৎসকের বাবা বাদী হয়ে নগরীর চন্দ্রিমা থানায় একটি মামলা করেছেন। পুলিশ অপহরণের কাজে ব্যবহৃত গাড়িটি নম্বরসহ শনাক্ত করতে পেরেছে। এই নম্বর বিভিন্ন থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

 

ঢাট্রিউন/অন/৩৩


আরো পড়ুন

মন্তব্য