সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ১০:৫৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনামঃ
রাজশাহীতে মোটরসাইকেল আটকানোয় দুই পুলিশ সদস্যকে পেটালেন যুবক স্বাচিপ রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি ডা. জাহিদ, সম্পাদক ডা. অর্ণা জামান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দূর্ব্যবহার করার অভিযোগ উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে নিয়ামতপুরে উপজেলা নির্বাচন, জমে উঠেছে শেষ মূহুর্তের প্রচার-প্রচারণা সরিষাবাড়ীতে ইউপি সদস্যের ওপর হামলার ঘটনায় প্রধান আসামি মামুন গেপ্তার চাঁপাইনবাবগঞ্জে মহানন্দা নদীতে গোসল করতে নেমে দুজনের মৃত্যু রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে চাকরি রাজশাহীতে সিআইডি পরিচয়ে যুব অধিকার পরিষদ নেতাকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ ‘ভারত-চীন-রাশিয়া-বেলারুশ রাজশাহীর আম নিতে আগ্রহী’ জাতীয় পাটি চারঘাট উপজেলা শাখার আহবায়ক কমিটি গঠন

তুলে নিয়ে চাঁদা দাবির ঘটনায় রাজশাহীর চার পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

প্রতিবেদকঃ
প্রকাশিতঃ সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ১০:৫৫ পূর্বাহ্ন
পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

‘তোর বাপকে ফোন দিয়ে টাকা আনতে বল, নইলে মাদক মামলায় চালান দিয়ে দেব’

রাজশাহীতে এক তরুণকে (২২) তুলে নিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে বাহিনীর চার সদস্যকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করেছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।

রবিবার (৫ মে) বিকেলে রাজশাহী পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- গোদাগাড়ী প্রেমতলী তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আনোয়ারুল ইসলাম, কনস্টেবল রেজাউল করিম ও মিলন হোসেন।

জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান বলেন, “চাঁদা দাবির ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। প্রাথমিকভাবে চারজনকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার তদন্ত চলছে।”

জানা গেছে, শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোদাগাড়ী উপজেলার সোহানুর রহমান নামে গোগ্রাম গ্রামের এক তরুণকে তুলে নিয়ে যান কয়েকজন। তার বাবা মো. মুর্ত্তজা আলী একজন কাপড় ব্যবসায়ী।

ভুক্তভোগী ও স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাবার দোকান বন্ধ করে শনিবার রাত ৮টার দিকে সোহান তার দুই বন্ধুর সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে করে চারজন তাদের সামনে আসেন। তারা পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের তিনজনের মোবাইল ফোন নিয়ে নেন। এরপর তারা জোর করে সোহানকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে চলে যান।

রাত ৯টার দিকে তার হাতে হাতকড়া পরানো হয়।

এরপর তাকে প্রেমতলী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পাশে পদ্মার পাড়ে নিয়ে গিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।

অভিযুক্তরা তাকে বলেন, ‘‘তোর বাপকে ফোন দিয়ে টাকা আনতে বল, নইলে মাদক মামলায় চালান দিয়ে দেব।’’

তখন ভুক্তভোগীর মোবাইল ফোনে তার মা-বাবা বারবার কল করছিলেন। কিন্তু অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা তাকে মা-বাবার সঙ্গে কথা বলতে দেননি।

রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার বসন্তপুরে ফাঁকা রাস্তার পাশে নামিয়ে দিলে সোহান গোগ্রাম বাজারে চলে যান।

সোহান ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “তাদের আচরণ ছিল একেবারে পুলিশের মতো। তবে পরনে বাহিনীর কোনো পোশাক ছিল না। বারবার ফোন আসছিল আর ‘স্যার স্যার’ বলছিলেন। তাদের একজনের কাছে থাকা হাতকড়া আমার হাতে পরিয়ে দেওয়া হয়। তারা আমার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে গাড়ি এনে থানায় নিয়ে চালান দিয়ে দেবেন বলেও হুমকি দেন। আমি ভয় না পেয়ে তাদের সঙ্গে থানায় যেতে চাই। রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।”

সোহানুর আরও বলেন, “ওই চারজন আমার ফোনের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের পিন নম্বর নিয়ে আমার সামনেই তিন হাজারের মতো টাকা তুলে নেন। ছেড়ে দেওয়ার আগেই দুজন পুলিশ সদস্য সেখান থেকে চলে যান। বাকি দুজন আমাকে ফাঁকা রাস্তায় নামিয়ে দেন।”

এদিকে, সোহানকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এই অবস্থায় পরিবার তাকে খুঁজতে থাকে। থানা-পুলিশকেও ফোন করা হয়। এরই মধ্যে এএসআই আনোয়ারুলকে সাদা পোশাকে গোগ্রাম বাজারে দেখতে পান স্থানীয়রা। স্থানীয়রা তার কাছে সোহানুরের বিষয়ে জানতে চান। একপর্যায়ে তাকে অবরুদ্ধ করা হয়।

খবর পেয়ে প্রেমতলী তদন্তকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসমান গণি অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়েই স্থানীয় লোকজনকে লাঠিপেটা করেন তিনি। এতে সাত-আটজন আহত হন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশের গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন স্থানীয়রা। এ ঘটনা শুনে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি আবদুল মতিন ও গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সোহেল রানা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে এএসআই আনোয়ারুলকে নিয়ে চলে যান।

সোহানকে তুলে নিয়ে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে এএসআই আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ওই ঘটনার পর তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু তিনি এই ঘটনায় জড়িত নন। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।

 

ঢাকা ট্রিবিউন 


আরো পড়ুন