প্রথম পাতা ডেস্ক : অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করার পর চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) প্রশাসনিক ভবনের মূল দরজায় তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ ভবনে উপাচার্য, সহউপাচার্য, রেজিস্ট্রারের কার্যালয় রয়েছে। তারা তিনজনই ভবনের ভেতরে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তালা দিয়ে আন্দোলনরত ছাত্রীরা ভবনের নিচে অবস্থান নিয়েছেন।অন্যদিকে এক সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, হল না ছাড়ার ঘোষণা শিক্ষার্থীদের। দাবি আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তারা ফের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার মধ্যেই হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ১৫১তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে ছাত্রদের বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা এবং ছাত্রীদের শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে হল খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ডিন, ইনস্টিটিউট পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধান, প্রভোস্ট এবং ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের সমন্বয়ে এক জরুরি সভার ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে সকাল থেকে চুয়েট ক্যাম্পাসের সামনে ‘আমাদের দাবি মানতে হবে’, ‘শাহ আমানত চলবে না’ এমন স্লোগান দিয়ে কাপ্তাই সড়কে আন্দোলন করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা চতুর্থ দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি চুয়েটের কয়েকটি একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন।বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিগুলো তুলে ধরেন। এ সময় তারা চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কটি চার লাইন সড়ক করার দাবি জানায়।
সব দাবি লিখিতভাবে না মানা পর্যন্ত চুয়েটের হল না ছাড়ার ঘোষণা শিক্ষার্থীদের এবং সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে বলে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে আলোচনায় বসার দাবি জানান।গত ২২ এপ্রিল আনুমানিক বেলা সাড়ে ৩টায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার জিয়ানগরে বাসের ধাক্কায় মারা যান চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা এবং একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌফিক হোসাইন। এ ছাড়া আহত হন একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাকারিয়া হিমু। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওই দিন সন্ধ্যা ৭টায় প্রথম দফায় সড়ক অবরোধ করা হয়। এরপর ২৪ এপ্রিল সকাল ১০টা থেকে এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অবরোধ ও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন চলমান রয়েছে।