রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার মৌগাছি কলেজের অধ্যক্ষ শামসুজ্জোহা বেলালের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বুধবার বিকেল ৪টায় কলেজটি সরেজমিন পরিদর্শন এবং শিক্ষক-অভিভাবকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আয়শা সিদ্দিকা। এসময় তিনি মৌগাছি কলেজের অধ্যক্ষের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করার কথা জানান।
এরআগে, চলতি মাসের গত ১১ নভেম্বর রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের মোহনপুর মৌগাছি কলেজ গেটের সামনে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, দাতা সদস্য, কর্মচারী ও এলাকাবাসীর আয়োজনে কলেজের অধ্যক্ষ শামসুজ্জোহা বেলালের দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্তপূর্বক বিচার ও পদত্যাগের দাবিতে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর অভিযোগপত্রও দেন তাঁরা। এনিয়ে সেসময় বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদও প্রকাশ হয়।
অভিযোগে সূত্রে জানা গেছে, ২০০০ সালে মৌগাছী কলেজটি প্রতিষ্ঠিত ও ২০০৫ সালে স্বীকৃতি প্রাপ্ত হলেও শুধুমাত্র অত্র কলেজের অধ্যক্ষ শামসুজ্জোহা বেলালের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে আজ অবধি কলেজটি এমপিওভুক্ত হয়নি। প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তির দিকে গুরুত্ব না দিয়ে, ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক সেবন ও বিক্রি এবং অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন এ অধ্যক্ষ। এমনকি তিনি মাদক মামলা সহ নারী কেলেঙ্কারী মামলায় বেশ কয়েকবার জেলও খেটেছেন। কিন্তু বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটির পদ থাকায় ও সরকার দলীয় তৎকালীন এমপির তদবিরে আবার জামিনে এসে বহাল তবিয়তে ছিলেন।
জানা গেছে, অধ্যক্ষ শামসুজ্জোহা বেলালের দুর্নীতির কারণে তিনি ইচ্ছে করে কলেজের স্বীকৃতি নবায়ন করেননি, কলেজ কমিটি গঠন করেননি, কলেজের ১.১২ একর জমির খাজনা পরিশোধ করেননি। বরং কলেজের ফান্ড তসরুফ করার পাশাপাশি অদ্যবধি কলেজের জমি বন্ধক রেখে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আবার শিক্ষার্থী ভর্তিতে মনোযোগী না হয়ে একই পদে একাধিক ব্যক্তিকে নিয়োগ দিয়েছেন অধ্যক্ষ শামসুজ্জোহা বেলাল।
ইউএনও’র সাথে মতবিনিময়কালে অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মৌগাছী কলেজের দাতা সদস্য ফেরদৌস আলী, প্রভাষক এনতাজ আলী, প্রভাষক আবু বক্কর সিদ্দিক, প্রভাষক মির্জা দৌলাতুন নাহার আশা, বিশিষ্ট সমাজসেবক নুরুল ইসলাম মন্ডল, বকুল হোসেন, নূরুল সহ অনেকে।
মুঠোফোনে কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ও মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আয়শা সিদ্দিকা বলেন, মূলত বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে মৌগাছি কলেজ পরিদর্শন ও শিক্ষক-অভিভাবকদের সাথে মতবিনিময় করেছি। তবে পরিদর্শনকালে কলেজ অধ্যক্ষ অনুপস্থিত ছিলেন।
ইউএনও আরও বলেন, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তে ইতিমধ্যে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।এদিকে, অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ শামসুজ্জোহা বেলালের নিকট জানতে তার ব্যক্তিগত ফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটি বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।