বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:৫২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনামঃ

সাবেক ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে আবাসিক হোটেলে ডাকাতির অভিযোগ

প্রথম পাতা
প্রকাশিতঃ বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:৫২ অপরাহ্ন

রাজশাহীতে সাহেব বাজার গণকপাড়া এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে ডাকাতির অভিযোগে পাওয়া গেছে। মুখোশ পরা ৮ থেকে ১০ সশস্ত্র  যুবক মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে হোটেল গ্রান্ড আবাসিকে হানা দেয়। হোটেলটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিম্মি করে টাকা-পয়সা ও কিছু জিনিসপত্র লুট করে।

হোটেলের ম্যানেজার ঘটনাটিকে ডাকাতি দাবি করলেও পুলিশ বলছেন চাঁদাবাজি। এ ঘটনায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা জড়িত বলে দাবি করেছেন হোটেলটির মালিকের ভাতিজা রোকন সরকার। ম্যানেজার তৌকির আহমেদ রনিও ঘটনাটিকে ডাকাতি বলে দাবি করেছেন।

হোটেল মালিকের ভাতিজা রোকন সরকারের দাবি করেন, তারা কয়েকজনকে চিনতে পেরেছেন। রাজশাহী কলেজ ও সিটি কলেজের ছাত্রদলের দুই নেতার নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি দাবি করেন।

গ্রান্ড আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার তৌকির আহমেদ রনি জানান, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে মুখোশ পরা ৮ থেকে ১০ জন আকস্মিকভাবে হোটেলে প্রবেশ করে  প্রথমে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমরা চাঁদা দিতে না চাইলে তারা দোতলায় একটি কক্ষে আমাদের সকলকে আটকে রেখে হোটেলে ডাকাতি শুরু করেন। তারা হোটেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীর মোবাইল কেড়ে নিয়ে দোতলার একটি কক্ষে আটকে রাখে। এরপর তালা নিয়ে অফিস কক্ষের আলমারি লুট করেন। আমাদের একজনের কাছে থাকা ফোন থেকে কৌশলে পুলিশকে খবর দেই। দ্রুত ঘটনাস্থলে আসার জন্য অনুরোধ করি। এক ঘন্টা পর বোয়ালিয়া পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে তারা পালিয়ে যায়।

জানা গেছে, গণকপাড়ার হোটেল গ্রান্ড মালিকের নাম আবুল বাসার সুজন। সুজন রাজশাহীর তানোর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী-১ ( গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ অনুসারি হিসেবে পরিচিত। গত ৫ আগষ্টের পর মামলার আসামি হয়ে সুজন আত্মগোপনে রয়েছেন। বর্তমানে হোটেলটি দেখাশোনা করেন তার ভাতিজা রোকন সরকার।

মালিকের ভাতিজা রোকন সরকার অভিযোগে আরও বলেন, গত ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংগঠনের নামে তারা হোটেলে এসে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা করে কয়েকবার চাঁদা নিয়ে গেছে। কদিন আগে জুয়েল নামে একজন ফোন দিয়ে চাঁদা দাবি করেন। মঙ্গলবার রাতে এসে প্রথমে তারা ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমরা এতো টাকা দিতে পারব না বললে ডাকাতি শুরু করে।

রোকন সরকার আরও বলেন, হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা এই দলটির দু’জনের পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছি। তাদের একজন রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফামিম ও রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রদল নেতা নাফি। তারা দুইজনই রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর বিএনপি নেতা দিলদারের ভাতিজা। আমরা ঘটনার সময় সাহায্য চেয়ে আরএমপির বোয়ালিয়া জোনের এডিসি হাফিজুর রহমানকে জনাই। তখন তিনি বোয়ালিয়া থানার ওসিকে ফোন দিতে বলেন। তবে বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মেহেদী মাসুদকে জানানোরও অনেক সময় পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।

ডাকাতির এই ঘটনায় ছাত্রদলের কোন নেতাকর্মীরা জড়িত কিনা- জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আকবর আলী জ্যাকি বলেন, ওরা এখন কেউ ছাত্রদল নয়, ওরা সাবেক। ঘটনাটা কি ঘটেছে আমরাও জানার চেষ্টা করছি।

রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ বলেন, দলের কেউ এমন ঘটনায় জড়িত প্রমাণ হলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।

আরএমপির বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ওসি তদন্ত তাজেমুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তবে বুধবার দুপুর পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেননি। টাকা-পয়সা কিছু খোয়া গেছে কিনা আমরা এখনো জানি না।  অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

 

যআন্তর/জা/০২


আরো পড়ুন

মন্তব্য