মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৩:৩৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনামঃ
খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে দোয়া ও ইফতার মাহফিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের উদ্যোগে অসহায়দের মাঝে ইফতার বিতরণ গভীর রাতে পুড়ে ছাই আড়াইশ হাঁশ-মুরগিসহ দোকান চাঁপাইনবাবগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে দোয়া ও ইফতার মাহফিল প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ তানোরে কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জে জিয়া সাইবার ফোর্সের ১০ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইকো টয়লেট পরিদর্শনে জাপানের নিষ্কাশন ও পরিবেশ এ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারপার্সন সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এখন টিভির সাংবাদিক মাসুমা আক্তারের মৃত্যু কার্যালয় নির্মাণে ২৫ লাখ টাকা দেয়ার ঘোষণা আশরাফ চেয়ারম্যানের

রাজশাহীতে ফুটপাতে গড়ে উঠছে দোকানপাট, রাজনৈতিক কার্যালয়

প্রথম পাতা
প্রকাশিতঃ মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৩:৩৪ অপরাহ্ন
Oplus_0

রাজশাহী নগরের তালাইমারী থেকে বিনোদপুর পর্যন্ত ফুটপাতের ওপর অস্থায়ী দোকান বসানো হয়েছে। কোথাও কোথাও বাঁশের বেড়া দিয়ে দখলও করা হচ্ছে। শুধু তা–ই নয়, বিনোদপুর বাজারে ফুটপাত দখল করে বিএনপির কার্যালয়ও বানানো হয়েছে।

তালাইমারী থেকে বিনোদপুর পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে ফুটপাত দখল হওয়ায় মানুষকে মূল সড়ক দিয়ে হাঁটতে হচ্ছে। রাস্তার সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছে।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, রাজশাহী নগরের প্রবেশপথ এই রাস্তার ফুটপাত দখলমুক্ত করা দরকার। প্রয়োজনে পুরোনো ব্যবসায়ীদের আলাদা করে পুনর্বাসন করা যেতে পারে।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া আফরিন বলেন, ‘মাঝখানে কিছুদিন পুলিশের সেভাবে সাপোর্ট ছিল না। এ কারণে বের হতে পারিনি। আমরা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি। খুব দ্রুতই ফুটপাত দখলমুক্ত করার অভিযান পরিচালনা করা হবে। ফুটপাত মানুষের ব্যবহারের জন্য। এখানে ব্যবসা করার কোনো সুযোগ নেই।’

রাজশাহীর তালাইমারী মোড় থেকে কাটাখালী বাজার পর্যন্ত সড়কটি নগরের প্রধান প্রবেশদ্বার। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের এই ৪ দশমিক ১০ কিলোমিটার অংশ ছয় লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। তবে জমি অধিগ্রহণ করতে না পারায় পরিকল্পনামতো সড়ক প্রশস্ত হচ্ছে না। সরকারের অর্থায়নে রাসিকের সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এই সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। ৯৩ কোটি ৪৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে কাজটি ২০২১ সালের ২০ অক্টোবর শুরু হয়। তবে রাস্তার কাজ পুরোটা শেষ না হলেও নতুন করে ফুটপাত দখল শুরু হয়েছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, নগরের তালাইমারী এলাকা থেকে রাস্তার দুই ধারে ফুটপাত দখল করা হয়েছে। তবে রাস্তার উত্তর পাশে দখলের পরিমাণটা বেশি। তালাইমারী–সংলগ্ন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ফুটপাতের ওপর একাধিক চায়ের দোকান, নার্সারি, ভাঙারির দোকান, ট্রাক ভাড়া দেওয়ার দোকান বসানো হয়েছে। কাজলা এলাকায়ও ফুটপাত ঘেঁষে ব্যবসা করা দোকানিরা ফুটপাত দখলেই রাখছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ও ফটকের পূর্ব পাশ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস স্টাডিজ বিভাগ পর্যন্ত উত্তর পাশের ফুটপাত দখলে নেওয়া হয়েছে। এসব এলাকায় ফুটপাতে সবজি, মাছ, মাংসের বাজার, চায়ের দোকান, খাবার দোকান, সাইকেল-ভ্যান-মোটরসাইকেল সারানোর দোকান, বাস কাউন্টারের দোকান বসানো হয়েছে। কেউ কেউ বাঁশ দিয়ে জায়গা দখলেও রেখেছে। সেগুলোতে দোকান বসানো হয়নি। এসব এলাকায় ফুটপাতগুলোর দোকান বাঁশ ও ইট-সুরকি-সিমেন্টের খুঁটি পেতে বসানো হয়েছে। ওপরে দেওয়া হয়েছে টিন।

নগরের তালাইমারী এলাকায় ফুটপাতে কিছুদিন হলো ভাঙারির দোকান দিয়েছেন কাজলা এলাকার মো. মুসা। তিনি বলেন, তিনি নিজে থেকেই দোকান বসিয়েছেন। কেউ তাঁকে বাধা দেয়নি। সরকার থেকে আদেশ হলে চলে যাবেন। এই দোকানের পাশে ট্রাক ভাড়া দেওয়ার দোকান বসিয়েছেন শফিকুল ইসলাম নামের এক চালক। তিনি বলেন, সবাই দোকান বসাচ্ছিলেন। তাই তিনিও বসিয়েছেন। সিটি করপোরেশন না চাইলে দোকান রাখবেন না।

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. সেলিম মিয়া বলেন, ফুটপাত দখল হওয়ায় কোথাও কোথাও তাঁদের রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। আর রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল করায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। এসব ফুটপাত দখলমুক্ত না করা হলে রাস্তা দিয়েই হাঁটতে হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলামের সঙ্গে বিনোদপুর বাজারে কথা হয়। তিনি বলেন, রাস্তা প্রশস্ত হওয়ার আগে মূল রাস্তা থেকে দূরে কিছু ব্যবসায়ী ব্যবসা করত। কিন্তু সরকার পতনের পর ধীরে ধীরে পুরো ফুটপাতই দখলে নেওয়া হয়েছে। ফুটপাত দখল থাকায় একদিকে সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। পুরোনো ব্যবসায়ীদের অন্যত্র পুনর্বাসন করে ফুটপাত দখলমুক্ত করা দরকার।

সম্প্রতি নগরের বিনোদপুর এলাকায় বিএনপির কার্যালয় বসানো হয়েছে। ফুটপাতের ওপর কার্যালয় লেখা একটি বিশাল ব্যানার দেওয়া হয়েছে। ওই ব্যানারে শহীদ জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনুর ছবিও দেওয়া হয়েছে। লেখা রয়েছে, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি-অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন, ৩০ নম্বর ওয়ার্ড, রাজশাহী মহানগর’। কার্যালয়ের ভেতরে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কর্মসূচির ব্যানার টানিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে বসে চা পান করছিলেন জামাল নামে সাবেক এক ছাত্রদল নেতা। তিনি দাবি করেন, এই জায়গার সামনে নব্বইয়ের দশকে বিএনপির কার্যালয় ছিল। এখন সেই জায়গায় সড়ক হয়ে গেছে। তাই ফুটপাতে অফিসটি আপাতত বসানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী বলেন, ফুটপাতে কার্যালয় করার বিষয়টি তাঁর জানা নেই। অনেক আগে বিনোদপুরে একটি কার্যালয় ছিল। হয়তো অনেকেই দোকান বসিয়েছে। তার সঙ্গে কার্যালয় হয়তো বসিয়েছে। ফুটপাতে কোনো কার্যালয় থাকবে না। তিনি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন।

সূত্র: ইন্টারনেট 


আরো পড়ুন

মন্তব্য