মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনামঃ
রাজশাহীতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এর জন্মবার্ষিকীতে দোয়া মাহফিল Reel Hit Video slot On line Free No Obtain মোহনপুরে তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে স্হানীয় শিল্প,পণ্য প্রদর্শনী,পিঠা উৎসব ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত সারাদেশে সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন Tomb Raider dos Pokies Online because of the Microgaming Play Totally free Slot রাজশাহীতে তারুণ্যের উৎসবে ২০২৫ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন রাজশাহীতে শীতার্ত দু:স্থ অসহায় মানুষদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ চাঁপাইনবাবগঞ্জ পলিটেকনিকে বিদায় সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত মোহনপুরে সরকারি ডিগ্রি কলেজে নবীন বরণ বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চাঁপাইনবাবগঞ্জ টাউন ক্লাবের আয়োজনে শীত বস্ত্র বিতরণ

রাজশাহীতে পুকুর ভরাট করে রাতারাতি কলাবাগান

প্রথম পাতা
প্রকাশিতঃ মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন
রাজশাহীতে পুকুর ভরাট

রাজশাহী মহানগরে একসময় কয়েক হাজার পুকুর ছিল। এক দশক আগে তা ৯৫২টিতে নেমে আসে। এখন ভরাট হতে হতে অল্পকিছু পুকুর টিকে আছে। রাজশাহীতে পুকুর ভরাট ও দখল নিয়ে ২০১৪ সালে উচ্চ আদালতে একটি রিট করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

সেই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ৮ আগস্ট রাজশাহী শহরের পুকুরগুলো সংরক্ষণের নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। সিটি মেয়র, পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসক ও র‌্যাবকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু পুকুর ভরাট থামেনি। ফলে বাড়ছে উষ্ণতা।

কিন্তু পুকুর ভরাট আজও থেমে নেই। মাসখানেক আগেও যেটি ছিল একটি পুকুর, সেটি ভরাট করে রাতারাতি সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে কলাবাগান। আইনে পুকুর ভরাট নিষিদ্ধ হলেও রাজশাহী মহানগরীর দায়রাপাক মোড় এলাকার এই পুকুর-হত্যা ঠেকাতে পারেনি প্রশাসন।

২৫ মার্চ রাতে ট্রাকের পর ট্রাক বালু ফেলে পুকুর ভরাট শুরু হয়। যারা ভরাটের কাজে নিয়োজিত ছিলেন, তারা বলছিলেন এ পুকুরে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মালিকানা রয়েছে। তবে তাদের নাম বলেননি।

বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর জেলা প্রশাসনের একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পুকুরে অভিযান চালায়। অবৈধভাবে পুকুর ভরাটের অপরাধে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চলে আসার পর পুকুর ভরাট আবার শুরু হয়। এরপর আসে ঈদের ছুটি। জোরেশোরে পুকুর ভরাটের কাজ এগিয়ে নেওয়া হয়। কয়েকদিনের মধ্যে ভরাট শেষ হয়। তার ওপরে করা হয়েছে কলাবাগান।

সাড়ে চার বিঘার এ পুকুরটি ছিল নাটোরের গোলাম মাওলা নামের এক ব্যক্তির। পরে কয়েক ব্যক্তি এটি কিনে নেন। ক্রেতাদের একজন বাগমারার আত-তিজারা গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল হালিম। আত-তিজারা রিয়েল এস্টেট কোম্পানি লিমিটেড নামে তার আবাসন ব্যবসা আছে।

আবদুল হালিমের সঙ্গে জেএমবি নেতা বাংলা ভাইয়ের ঘনিষ্ঠতা ছিল। তার বিরুদ্ধে জেএমবির সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকারও অভিযোগ ছিল। পরে তিনি জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে বাগমারার সাবেক এমপি এনামুল হকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বাগমারার বর্তমান এমপি আবুল কালাম আজাদের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠতা আছে।

যোগাযোগ করা হলে আবদুল হালিম বলেন, ‘কেনার পর বাড়ি করার জন্য কয়েক বন্ধু মিলে পুকুরটা ভরাট করেছি। এর শ্রেণি এখনো পুকুরই আছে। শ্রেণি পরিবর্তনের জন্য আবেদন করা হয়নি।’ আইনে পুকুর ভরাট নিষিদ্ধ- এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

পুকুরটি ভরাটের সময় পরিবেশ অধিদপ্তরের একদল কর্মকর্তা সরেজমিন পরিদর্শন করে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া আফরিন বলেছিলেন, পুকুরটির ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে তিনি অধীনস্থদের নির্দেশনা দিয়েছেন। পুকুর ভরাট করা হলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন।

একবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার পরও পুকুর ভরাট কার্যক্রম চলমান থাকার কথা শুনে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেছিলেন, তিনিও কঠোর ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু পরে আর কেউ কোনো ব্যবস্থা নেননি।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এসএ শাখার নথি অনুযায়ী, পুকুরটি বিক্রির আগে নাটোরের গোলাম মাওলা জমির শ্রেণি পরিবর্তনের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আবেদন করেন। শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে কি না, তা তদন্তপূর্বক মতামত দেওয়ার জন্য ১২ মার্চ রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর শাম্মী আক্তার নগরীর বোয়ালিয়া থানার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) চিঠি দিয়েছেন। চিঠি অনুযায়ী, জমির পরিমাণ দেড় একর।

পুকুর ভরাট শেষ, এখন শ্রেণি পরিবর্তন করে দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, আবেদন যে কেউ করতে পারে; কিন্তু আইন অনুযায়ী আবেদন গ্রহণ হবে কি না সেটি বিষয়। এ পুকুরটা ভরাটের খবর পেয়ে একবার ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয়েছিল। পরে ভরাট হয়ে গেছে কি না তা জানি না।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়ক তন্ময় কুমার সান্যাল বলেন, শহরের সব জলাশয় ভরাট হয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন। তাদের গাফিলতির কারণে সব পুকুর ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে রাজশাহীর আবহাওয়া চরমভাবাপন্ন হয়ে উঠেছে। শীতে এখানে অতিরিক্ত শীত, গ্রীষ্ণে অতিরিক্ত গরম। সেজন্য জলাশয় দরকার। তা না হলে রাজশাহীর পরিবেশ আরও খারাপ হয়ে উঠবে। তখন আর করার কিছু থাকবে না।

 

সিল্কসিটি নিউজ 


আরো পড়ুন

মন্তব্য