রাজশাহীর বাস শ্রমিকদের সঙ্গে দ্বদ্বের জেরে পবা উপজেলার নওহাটা ব্রিজ এলাকায় রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকেরা। বুধবার দুপুরে তাঁরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
কিছু সময় পর সড়ক ছেড়ে দিয়ে তারা দুই পাশে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। অটোরিক্সার চালকদের এই কর্মসূচির কারণে ভাঙচুর আতঙ্কে রাজশাহী থেকে নওগাঁর উদ্দেশে কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। নওগাঁর বাসগুলো মোহনপুর পর্যন্ত চলাচল করছে। তবে রাজশাহী-তানোর-মুন্ডুমালা রুটের বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
গত সোমবার সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকেরা তানোর উপজেলা সদরে বাসের ছয়জন চালক, চালকের সহকারী ও কন্ডাক্টরকে মারধর করেন। এর জেরে দুপুর থেকে রাজশাহীর সব রুটের বাস বন্ধ রাখা হয়। রাতে বাস চলাচল শুরু হলেও গতকাল মঙ্গলবার সকালে আবার চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এরপর বাসশ্রমিকেরা নগরির শিরোইল বাস টার্মিনাল থেকে লাঠিসোঁটা ও হাতুড়ি নিয়ে রেলগেট সিএনজি স্ট্যান্ডে হামলা করেন। তাঁরা এ সময় ৭০-৮০টি অটোরিকশা ভাঙচুর করেন। পরে দুপুর থেকে আবার বাস চলাচল শুরু হয়। তবে বুধবার সকাল থেকে আবার রাজশাহী-নওগাঁ রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
পবার নওগাটায় মানববন্ধনে অটোরিক্সা চালকেরা বলেন, সিএনজি স্ট্যান্ডে এসে বাস শ্রমিকেরা তাঁদের ওপর আক্রমণ করেন। তাঁরা প্রায় ৯০টি অটোরিকশা ভাঙচুর করেছে। যাত্রী-চালকসহ অন্তত ৪০ জনকে মারধর করা হয়েছে। তারা এই ঘটনার বিচার চান। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রশাসনের বিচার করতে না পারলে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
যদিও জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিক আলী পাখি অটোরিকশা স্ট্যান্ডে হামলার দায় স্বীকার করেননি। তিনি বলেন, ‘ওরা নিজেরা নিজেরা ক্যাচাল করে নিজেরাই গাড়ি ভেঙেছে।
রাজশাহীর পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সিএনজিচালিত অটোরিক্সা চালকেরা বাস ভাঙচুর করতে পারেন এই আশঙ্কায় বাস চলছে না। আবার সিএনজি চালকেরা সিএনজিও চলতে দিচ্ছে না। তারা বলছে, বিষয়টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সড়কে বাস যেমন বন্ধ থাকবে, তেমনি সিএনজি অটোরিকশাও বন্ধ রাখতে হবে।
রাজশাহী বাস মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম হেলাল বলেন, ‘আজ সকালে বাস চলাচল করার সময় সিএনজির চালকেরা নওহাটায় আমাদের দুটি বাস ভাঙচুর করেছে। এজন্য আতঙ্কে ওই রুটে রাজশাহী থেকে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। নওগাঁর বাস মোহনপুর পর্যন্ত এসে ফিরে যাচ্ছে।
তানোরে বাস শ্রমিকদের ওপর হামলার ঘটনায় থানায় ১৮ সিএনজিচালিত অটোরিক্সা চালকের নামে মামলা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। সিএনজি স্ট্যান্ডে হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন চালকেরা। এ অবস্থায় বেলা ৩টার দিকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার নূর আলম সিদ্দিকী উভয় পক্ষকে নিয়ে বসেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘বিষয়টির সমাধান হওয়া জরুরি। এ জন্য ট্রাফিক বিভাগ উভয় পক্ষকে নিয়ে বসেছে। আমরা আশা করছি, আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান হবে।
ইলাব/জা/০৬