রাজশাহীর বাগমারায় সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনির নিরাপত্তা দিতে আসা পুলিশের গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সদ্যনির্বাচিত সংসদ-সদস্য আবুল কালাম আজাদের অনুসারীরা এ হামলার সঙ্গে জড়িত। পরে চালক দ্রুত গাড়িটি তাহেরপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে নিয়ে পুলিশ সদস্যদের এবং গাড়িটি রক্ষা করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভায় মহিলা আওয়ামী লীগ ও যুব মহিলা লীগের সঙ্গে মতবিনিময় সভাসহ বিকালে জামগ্রামে ইফতার মাহফিলে যোগদানের জন্য সফরে আসেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মন্ত্রীর সফর উপলক্ষ্যে তাহেরপুর বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এদিকে বেলা ১১টার দিকে ঝিকরা পুলিশ তদন্তকেন্দ্র থেকে কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিয়ে তাহেরপুর হরিতলায় আসে পুলিশকে উপহার দেওয়া সাবেক সংসদ-সদস্য এনামুল হকের স্টিকার সংবলিত একটি পিকআপ। গাড়িটি থেকে পুলিশ সদস্যরা নামার আগেই সেখানে অবস্থান নেওয়া সংসদ-সদস্য আবুল কালাম আজাদের অর্ধশতাধিক অনুসারী ওই গাড়িতে হামলা করেন।
এ সময় হামলাকারীরা গাড়ির চালক পুলিশ সদস্য ফিরোজকে বলতে থাকেন, ‘তুই এনামুল হকের গাড়ি নিয়ে কেন তাহেরপুর এসেছিস।’ হামলাকারীরা পুলিশের পিকআপে লাগানো সাবেক সংসদ-সদস্য এনামুল হকের নাম সংবলিত স্টিকার তুলে ফেলে এবং রড দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে।
প্রকৌশলী এনামুল হক ২০০৮ সালে প্রথমবার সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাগমারা থানা পুলিশকে দুটি পিকআপ উপহার দেন।
পুলিশের ওই পিকআপচালক ফিরোজ গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, আমি পুলিশ সদস্যদের নামিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে তাহেরপুরে এসেছি। হরিতলা মোড়ে হালকা ব্রেক দিয়েছি তাদের নামানোর জন্য। এ সময় দ্রুত হামলাকারীরা এসে অতর্কিতভাবে গাড়িটি ঘিরে ধরে আর স্টিকার তুলে ফেলাসহ হামলা ও ভাঙচুর করে। সেই সঙ্গে লাথি মারতে থাকে।
স্থানীয়রা জানান, তাহেরপুর পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সংসদ-সদস্য কালামের অনুসারী সোহেল রানা এবং তাহেরপুর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কোরবান আলীর নেতৃত্বে পুলিশের গাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে যুবলীগ নেতা সোহেল রানা বলেন, একটা বিশৃঙ্খলা হয়েছিল। কিছু কমবয়সি ছেলে নিজেদের মধ্যে ঝামেলা করছিল। আমরা সেখানে উপস্থিত ছিলাম। ঝামেলা মীমাংসা করে দিয়েছি। তবে পুলিশের পিকআপ ভাঙচুরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল আলম বলেন, এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না, সেটি আমরা খতিয়ে দেখছি। যদি সেরকম কোনো ঘটনা ঘটে, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।