নাটোরের লালপুর উপজেলার নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস লিমিটেডের চিনি উৎপাদন গত বছরের চেয়ে প্রায় আড়াই গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশের সরকারি চিনিকলগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) অর্জনও করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। তবে আখ মাড়াই সমাপ্তির ১৩ দিনেও আয় ও ব্যায়ের হিসাব চুড়ান্ত করতে পারে নি চিনিকল সংশ্লিষ্টরা।
চিনিকল কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০২৩-২৪ মাড়াই মৌসুমে ১১৪ দিনে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৬৩৩ মেক্টিক টন আখ মাড়াই করে গত ৩ মার্চ শেষ করে চিনিকলটি। এতে ৫.৬৮ শতাংশ হারে ১০ হাজার ৫২৫ মেক্টিন টন চিনি উৎপাদন হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় আড়াই গুণ বেশি। আর এবছর বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি ছিল ১০৩ দিনে ১ লাখ ৭০ হাজার টন আখ মাড়াই করে ১১ হাজার ৭৩০ টন চিনি উৎপাদন করা। যা সরকারি চিনিকলগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র এই চিনিকলটিই অর্জন করেছে। আর গত মৌসুমে আখ সংকটে মাত্র ৮১ হাজার ৮২৯ মেক্টিক টন আখ মাড়াই করে ৪ হাজার ৪০৭ মেক্টিক টন চিনি উৎপাদন করেছিল।
তারা আরো জানায়, সারাদেশে সর্বমোট নয়টি সরকারি চিনিকলে উৎপাদিত চিনির মধ্যে শুধু এই চিনিকল থেকেই আখ ক্রাশিং ৩০ শতাংশ এবং ৩৪ শতাংশ চিনি উৎপাদন করা হয়েছে। আখের মূল্যবৃদ্ধি ও মিলজোন এলাকায় অবৈধ পাওয়ার ক্রাশারে আখ মাড়াই জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করে শতভাগ বন্ধ রাখায় এসাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান চিনিকল সংশ্লিষ্টরা।
এবিষয়ে চিনিকলটির মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) আসহাব উদ্দিন বলেন, গত ১০ বছরের ইতিহাসে এবছরই প্রথম একর প্রতি প্রায় ১০ মেক্টিক টন আখ মিলের কারখানায় সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে। আগামী মাড়াই মৌসুমের জন্য মিল এলাকায় ইতিমধ্যে ১৭ হাজার ৫০০ একর জমিতে আখ রোপন করা হয়েছে। আশা করি আগামী আখ মাড়াই মৌসুমেও চিনিকলে আখ সংকট থাকবে না।
মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খবির উদ্দিন মোল্যা বলেন, দেশের ৯টি চিনিকলে যে চিনি উৎপাদন হয়েছে তার ৩৪ ভাগ চিনি উৎপাদন হয়েছে এই চিনিকলে। মিল এলাকায় অবৈধ পাওয়ার ক্রাশার বন্ধে প্রশাসন, আখচাষিসহ সকলের সহযোগিতা ও চিনিকলের সকল কর্মকর্তা শ্রমিক-কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে দীর্ঘদিন পর ভালো অবস্থানে এসেছে চিনিকলটি। তবে কি পরিমাণ লাভ হবে তা চূড়ান্ত হিসাব না করে বলা সম্ভব নয়।