রাবি প্রতিনিধিঃ হাইকোর্টের কোটা পুনর্বহাল রায় বাতিলের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মানববন্ধন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।আজ বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সকাল ১১:০০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর সামনে মানববন্ধন করেন তারা।
এসময় মানববন্ধনে অবস্থানরত আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা বলেন, আমি একজন নারী প্রথম শ্রেনির চাকরিতে আমার কোটা বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও আমি এই বৈষম্যমূলক কোটাকে দৃঢ় প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি যদি আমার যোগ্যতা থাকে মেধা রাখ তাহলে আমার যোগ্যতা ও মেধা দিয়ে আমি প্রথম শ্রেণীর চাকরি অর্জন করতে পারব।
এবং আমি মনে করি বাংলাদেশের প্রতিটি মেয়ের এই সক্ষমতা রয়েছে৷কোটা দিয়ে কামলা নয় মেধা দিয়ে আমলা চাই । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য কোন কোটার দরকার ছিল না তিনি তার মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। চাকরিতে সকল কোটা মিলিয়ে সর্বমোট ৫৬% রয়েছে আর বাকি ৪৪% মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে যা পাকিস্তানি সরকার কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের উপর বৈষম্যমূলক নীতির ন্যায়।
রাকসু আন্দোলনের মঞ্চের সদস্য সচিব আমানুল্লাহ আমান বলেন, আমাদের আজকে লাইব্রেরীর রিডিং রুমে থাকার কথা ছিল কিন্তু আমরা সেখানে থাকতে পারিনি রাজপথে নেমে আসতে বাধ্য হয়েছে। আজকে আমরা দাড়িয়েছি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর সামনে যদি আমাদের দাবি মেনে নেয়া না হয় পরবর্তীতে আমরা দাঁড়াবো বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটে তারপরেও যদি মেনে নেওয়া না হয় আমরা সেই রাস্তায় নেমে যাব। কোটা পুনর্বহান রায় যতদিন না পর্যন্ত বাতিল করা হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। আন্দোলনের স্রোতধারা পরিবর্তন হতে পারে কিন্তু আমাদের দাবিদাওয়া থেকে পিছপা হবো না।
ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি মেহেদী সজিব বলেন, মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল সাম্য, নাগরিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয় ৫৩ বছর স্বাধীনতার পরেও আমরা সাম্যেরে দেখা পাইনি। এখনো অব্দি চাকরিতে ওদের মত শিক্ষার্থীদের সাথে কোটা নামক বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। ২০১৮ সালে আমরা কোটার আন্দোলন করলে সেখানে প্রধানমন্ত্রী বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।কিন্তু বর্তমানে কিছু মুষ্টিমেয় লোক আবারও কোটা পদ্ধতি বহাল রাখার জন্য হাইকোর্টে আপেল করে। কোটা পুনর্বহাল রেখে হাইকোর্ট যে দায় ঘোষণা করে আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
ইনফরমেশন সাইন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট এর শিক্ষার্থী নাইম বলেন, আমি বিশ্বাস করি কোটা পুনর্বহাল রায় বাতিল করা না হলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯ হাজার শিক্ষার্থী কেউ ঘরে বসে থাকবে না। ২০১৮ সালের ন্যায় জেগেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় জেগেছে, জেগেছে ২০১৮ সালের সেই বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আবারো জেগেছে। প্রধানমন্ত্রী আপনার সম্মানার্থে বলছি এমন কোন সিদ্ধান্ত নিবেন না যা বাংলাদেশের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মেনে নেবে না। যদি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করতে হয় তাহলে তাদেরকে স্বর্ণ পোষিত আবাসনের ব্যবস্থা করে দেন এ নিয়ে ছাত্র সমাজ কোন কথা বলবে না সেই সাথে প্রতিমাসে তাদের লক্ষ টাকা সম্মানী প্রদান করলেও ছাত্র সমাজ কোন প্রতিবাদ জানাবে না।
এছাড়াও উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচীতে প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী একাত্মতা পোষন করে এই কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন।